রামাদান কারীম vs রমজান কারীম

রামাদান কারীম

Special Events UAE

সংযুক্ত আরব আমিরাতে আগামীকাল ২৩শে মার্চ ২০২৩, রামাদান শুরু হচ্ছে। রামাদান কারীম

রমজান মাস হল প্রতিফলন, চিন্তাভাবনা এবং উদযাপনের একটি সময়।

এই রমজান মাসে আপনাকে একটি বরকতময় মাসের জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করার জন্য, আমরা নীচের বিষয়ে সচেতন হওয়ার জন্য মূল তারিখগুলি সরবরাহ করেছি।
রামাদানুল কারিম হল আল্লাহর একটি মোবারক মাস, যা আল্লাহর অসংখ্য নেয়ামত সমূহের মধ্যে অন্যতম।

এই মাসের মধ্যে রয়েছে রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও নাজাত।

আবার এই মাসেই আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন কোরআন, যা হেদায়েত, ফুরকান, নূর, রহমত ও শিফা। আবার এই মাসেই রয়েছে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম একটি রজনী, লাইলাতুল কদর।
এই বরকতময় রামাদান মাসে আপনার প্রস্তুতির জন্য সাহায্য করতে, আমরা নীচের বিষয় গুলো শেয়ার করেছি।

রামাদান অর্থ কি?

রামাদান বা রমজান শব্দের অর্থ হলো প্রচণ্ড গরম, সূর্যের খরতাপে পাথর উত্তপ্ত হওয়া, সূর্যতাপে উত্তপ্ত বালু বা মরুভূমি, মাটির তাপে পায়ে ফোসকা পড়ে যাওয়া, পুড়ে যাওয়া, ঝলসে যাওয়া, কাবাব বানানো, ঘাম ঝরানো, চর্বি গলানো, জ্বর, তাপ ইত্যাদি।

রমজানে ক্ষুধা-তৃষ্ণায় রোজাদারের পেটে আগুন জ্বলে; পাপতাপ পুড়ে ছাই হয়ে রোজাদার নিষ্পাপ হয়ে যায়; তাই এ মাসের নাম রমজান (লিসানুল আরব)।
সাধারণ ভাষায় রোজা হলো সারাদিন পানাহার ও জৈবিক চাহিদা থেকে বিরত থাকা। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে শুধু সারাদিন না খেয়ে থাকার নাম রোজা নয়, বরং রোজা হলো আমাদের ইন্দ্রিয়ের হেফাজত করা, হারাম থেকে বেঁচে থাকা।

রামাদানের পূর্বপ্রস্তুতি

নবীজি (সা.) রমজানের ২ মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করতেন।

আত্মিক ও মানসিকভাবে রমজানকে স্বাগত জানাতে ব্যাকুল হয়ে থাকতেন। রমজানে মাসব্যাপী সিয়াম পালনের জন্য তিনি শাবান মাস থেকে অধিক হারে রোজা রেখে দৈহিক প্রস্তুতি নিতেন।

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে শাবান মাসের তুলনায় অধিক পরিমাণ রোজা পালন করতে অন্য কোনো মাসে দেখিনি। তিনি শাবানের প্রায় পুরোটাই রোজায় অতিবাহিত করতেন, কিছু অংশ ব্যতীত পুরো শাবান মাস রোজা রাখতেন। (মুসলিম-১১৫৬)।

অপর হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, আমি নবীজিকে রমজান এবং শাবান মাস ব্যতীত ধারাবাহিকভাবে ২ মাস রোজা রাখতে দেখিনি। (সুনানে তিরমিজি-৭৩৬, নাসাঈ-২৩৫২)।

রামাদানের আমল / ইবাদত

  1. সিয়াম পালন করা
  2. সময় মত সালাত আদায় করা
  3. সহীহভাবে কুরআন শেখা
  4. অপরকে কুরআন পড়া শেখানো
  5. সাহরী খাওয়া
  6. সালাতুল তারাবীহ পড়া
  7. বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা
  8. শুকরিয়া আদায় করা
  9. কল্যাণকর কাজ বেশি বেশি করা
  10. সালাতুত তাহাজ্জুদ পড়া
  11. বেশি বেশি দান-সদাকাহ করা
  12. উত্তম চরিত্র গঠনের অনুশীলন করা
  13. ই‘তিকাফ করা
  14. দাওয়াতে দ্বীনের কাজ করা
  15. সামর্থ্য থাকলে উমরা পালন করা
  16. লাইলাতুল কদর তালাশ করা
  17. বেশি বেশি দো‘আ করা
  18. ইফতার করা
  19. ইফতার করানো
  20. তাওবাহ ও ইস্তেগফার করা
  21. তাকওয়া অর্জন করা
  22. ফজরের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত মসজিদে অবস্থান করা
  23. ফিতরাহ দেয়া
  24. অপরকে খাদ্য খাওয়ানো
  25. আত্মীয়তার সম্পর্ক উন্নীত করা
  26. কুরআন মুখস্থ বা হিফয করা
  27. আল্লাহর যিকির করা
  28. মিসওয়াক করা
  29. একজন অপরজনকে কুরআন শুনানো
  30. কুরআন বুঝা ও আমল করা

যা করণীয় নয়:

রমাদান মাসের ফজিলত হাসিল করার জন্য এমন কিছু কাজ রয়েছে যা থেকে বিরত থাকা দরকার, সেগুলো নিম্নে উপস্থাপন করা হল :

  1. বিলম্বে ইফতার করা
  2. সাহরী না খাওয়া
  3. শেষের দশ দিন কেনা কাটায় ব্যস্ত থাকা
  4. মিথ্যা বলা ও অন্যান্য পাপ কাজ করা
  5. অপচয় ও অপব্যয় করা
  6. তিলাওয়াতের হক আদায় না করে কুরআন খতম করা
  7. জামা‘আতের সাথে ফরয সালাত আদায়ে অলসতা করা
  8. বেশি বেশি খাওয়া
  9. রিয়া বা লোক দেখানো ইবাদাত করা
  10. বেশি বেশি ঘুমানো
  11. সংকট তৈরি করা জিনিস পত্রের দাম বৃদ্ধির জন্য
  12. অশ্লীল ছবি, নাটক দেখা
  13. বেহুদা কাজে রাত জাগরণ করা
  14. বিদ‘আত করা
  15. দুনিয়াবী ব্যস্ততায় মগ্ন থাকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *