আগুন লাগার কারণ বিভিন্ন হতে পারে, যেমন বিদ্যুৎ সংক্রমণ, গ্যাস লিকেজ, প্রতিষ্ঠানের অবহেলা ইত্যাদি। তবে আগুন লাগলে পরিস্থিতি প্রায় সময়ই নিয়ন্ত্রণে থাকে না এবং সেক্ষেত্রে আগুনে মারা যাওয়া লোকদের সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে।
একটি নিরাপদ ভবন কিংবা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রথমত: প্রতিষ্ঠানের নির্মাণের সময় অগ্নি নিরাপত্তার সম্পর্কে নজর দেয়া উচিত। নির্মাণ প্রক্রিয়ার সময় এবং স্থানে আগুনের ঝুঁকি কমাতে সঠিক নির্দেশনা প্রদান করা উচিত। এছাড়াও নির্মাণ শেষে নির্মাণ পর্যবেক্ষণ এবং পরিচর্যার সময় নির্দিষ্ট নিয়মগুলো অনুসরণ করা উচিত।
আগুন নিরাপত্তা কি?
অগ্নি নিরাপত্তা হল ‘একটি সেট অফ মেসার’ যা ব্যবহার করে কোন জায়গায় আগুন লাগার ঝুঁকি কমানো নিশ্চিত করা হয়। এই মেসার ক্রাইটেরিয়া হতে পারে আগুনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন সুযোগ ও সুসম্পন্ন পদক্ষেপ যেমন স্প্রিঙকলার, হাইড্রান্ট এবং ফায়ার এক্সিংয়ুশার, কাছাকাছি পানির উৎস, বালি ভর্তি বালতি ইত্যাদি।
আমেরিকা তে কিভাবে আগুন নিরাপত্তা করা হয় ?
আমেরিকা একটি উন্নত দেশ এবং এখানে একটি উন্নত ফায়ার সিস্টেম রয়েছে। প্রায় সমস্ত বিল্ডিংয়ে ফায়ার এক্সিংয়ুশার ইনস্টল করা থাকে যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে এবং যেখানে প্রয়োজন সেখানে ফায়ার হাইড্রান্ট এবং স্প্রিঙকলার রয়েছে। এছাড়াও, বিভিন্ন জায়গায় ফায়ার স্টেশন রয়েছে যেখানে প্রাথমিক সাহায্য পাওয়া যায়।
অগ্নি নিরাপত্তার জন্য সাধারণ মানুষ কে কিভাবে ট্রেনিং পেতে পারে ?
অগ্নি নিরাপত্তার জন্য সাধারণ মানুষকে ট্রেনিং দেওয়া যেতে পারে যেমন ফায়ার সেফটি ট্রেনিং প্রোগ্রাম, কোর্স বা ট্রেনিং সেশন। এই ট্রেনিং সেশন এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষদের অগ্নি নিরাপত্তা সংক্রান্ত জ্ঞান এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করা যায়।
সাধারণত, ফায়ার সেফটি ট্রেনিং প্রোগ্রাম এর মাধ্যমে ট্রেনিং দেওয়া হয়।
এছাড়াও ট্রেনিং সেশন হতে পারে যেখানে আগুন নিরাপত্তার বিষয়ে ট্রেনিং করার মাধ্যমে সাধারণ মানুষদের প্রতিটি জায়গায় আগুন নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি করতে সাহায্য করে।
এছাড়াও স্কুল এবং কলেজের পাঠ্যক্রমে ফায়ার সেফটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে থাকা থেকে ছাত্রদের উচ্চ শিক্ষার মাঝেও একটি প্রাথমিক ধারণা দেয়া যেতে পারে।
ফায়ার সেফটি ট্রেনিং
ফায়ার সেফটি ট্রেনিং সম্পর্কে একাধিক ভিডিও এবং টিউটোরিয়াল পাওয়া যায় ইন্টারনেটে। নিচে কিছু ওয়েবসাইট এবং সম্প্রতি প্রকাশিত ভিডিও লিংক দেওয়া হলো যেখানে ফায়ার সেফটি ট্রেনিং সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে:
- ফায়ার এক্সটিংগুইসার এর পরিচিতি, ব্যবহার এবং ট্রেনিং: এটি ইউটিউবে পাওয়া যাবে . দেখুন, শিখুন, নিজে বাঁচুন , অন্যকে বাঁচান।
- ফায়ার সেফটি সম্পর্কে জানুন এবং ট্রেনিং নিনঃ এটি হল বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সেভিংস এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট যেখানে ফায়ার সেফটি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। https://www.fireservice.gov.bd/
আগুন লাগার পর ব্যক্তিগত ভাবে কিভাবে নিরাপদ থাকা যায়?
১। অতিরিক্ত রোদ থেকে দূরে থাকুন এবং অতিরিক্ত সংখ্যক মানুষ একত্রিত হতে সাবধান।
২। সরকারি বা যোগাযোগযোগ্য প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করুন।
৩। আগুনের দুর্ঘটনের স্থানে থাকবেন না।
৪। আগুন সামনে দেখলে সরে যাওয়ার চেষ্টা করুন। আগুনে পুড়ে গেলে যত দ্রুত সম্ভব প্রাথমিক চিকিৎসা পাওয়ার চেষ্টা করুন।
৫। আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখতে জানার জন্য পরিবারের সদস্যদের এবং স্বজনবন্দুদের সাথে আপনার পরিবারের নিরাপত্তা সম্পর্কে আলোচনা করতে পারেন।
আগুন থেকে নিরাপদ থাকার জন্য যে ৭টি জিনিস বাসায় জিনিস রাখলে ভালো হয়
- আগুন বন্ধ করার জন্য একটি ফায়ার এক্সটিংউশার রাখা উচিত।
- পরিবারের সদস্যদের জানতে হবে জরুরী সময়ে কোন জায়গায় পানি পাওয়া যাবে।
- গ্যাস সিলিন্ডার ও চুলা একসঙ্গে রাখা উচিত না। কাজ শেষে সবসময় গ্যাস সিলিন্ডার বন্ধ রাখতে হবে।
- সকল বিদ্যুৎ সম্পর্কিত পরিকল্পনা সঠিক ভাবে নেয়া উচিত। বৈদ্যুতিক সংযোগ নিয়মিত পরীক্ষা করুন।
- বাথরুমে বা কিচেনে ধুমপান না করা উচিত।
- ফ্ল্যামেবল পণ্য সমূহ যেমন পেট্রল, কেরোসিন, সবুজ ঘাস ইত্যাদি বাসায় রাখা উচিত না।
- আগুন বন্ধ করতে পারে এমন প্রতিষ্ঠান এর নম্বর হাতের কাছেই রাখুন। প্রয়োজনে যাতে দ্রুত যোগাযোগ করা যায়।
আগুন নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত
১. ডাক্ট লাইন ও ক্যাবল হোল সিল করা
২. আগুন প্রতিরোধী উপাদান ব্যবহার
৩. অ্যালার্ম সিস্টেম বসানো
৪. জরুরী বহির্গমন পথ নিশ্চিত করা ও ব্যবহার
৫. ফায়ার এক্সটিংগুইশার এবং স্প্রিঙ্কলার সিস্টেম ব্যবহার করা
৬. নিয়মিত মহড়া
বাংলাদেশে কখন এবং কোথায় আগুন লেগেছিলো?
- নিউ মার্কেট শহর, ঢাকা (২০১০, ২০২৩)
- বঙ্গবাজার , ঢাকা (২০২৩, ১৯৯৫)
- গুলিস্তান, ঢাকা (২০২৩)
- সীতাকুন্ড , চট্টগ্রাম (২০২২)
- হাশেম ফ্যাক্টর, নারায়ণগঞ্জ (২০২১)
- টাঙ্গাইল জেলা (২০১২)
- বান্দরবান হিলট্র্যাক রাজপাথর এলাকা (২০১২)
- ঢাকা আনান্দবাজার সদর ঘাট এলাকা (২০১২)
- বগুড়া শহর, বগুড়া (২০১৬)
- বাঘাবাজার শহর, রাজশাহী (২০১৬)
- টেকনাফ উপজেলা, কক্সবাজার (২০১৭)
- সদর উপজেলা, সিলেট (২০১৯)
- ফটিকছড়ি উপজেলা, চট্টগ্রাম (২০২০)
- সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা (২০২১)