Do's and dont's in the UAE

পর্যটক হিসেবে ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতে’ আপনার যে ১০ টি কাজ করা উচিত নয় 

UAE নিয়মনীতি

যেকোনো দেশে যাওয়ার সময়, প্লেনের টিকিট কেনার আগেই আমাদের সেসব দেশের স্থানীয় নিয়ম, বিধিবিধান এবং সাংস্কৃতিক  বিধিনিষেধ দেখে নেওয়া উচিত।  

আপনি যদি সংযুক্ত আরব আমিরাত ভ্রমন করতে চান, তাহলে দেশটির কিছু আইনি এবং সাংস্কৃতিক বিধিনিষেধ আপনার জানা থাকা উচিত।  

পর্যটকদের কখনই যা করা উচিত নয়, সে সম্পর্কে আমাদের এই গাইডটি দেখতে পারেন: 

প্রকাশ্যে মদ্যপান 

যদিও সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিভিন্ন বার এবং ক্লাব রয়েছে যেখানে চাইলেই অ্যালকোহল/মদ পাওয়া যায়। তারপরেও আপনি জনসমক্ষে মদ্যপান করতে পারবেন না।  

এছাড়া যে কোন ক্যাফে কিংবা রেষ্টুরেন্ট যেখানে অ্যালকোহল/মদ সক্রিয়ভাবে বিক্রি হচ্ছে না, সেখানেও মদ্যপানের অনুমতি নেই। এর মানে হল পাবলিক সৈকতে বিয়ার আনা বা রাস্তায় হাঁটার সময় একটু চেখে দেখা, এমনটি করা যাবে না।  
 
আপনি যদি সত্যিই বিয়ার/মদ পান করতে চান, তাহলে অনুমতি আছে এমন স্থানেই সেটা করা উচিত। এটা হতে পারে আপনার বাসা, কিংবা হোটেল রুম, অথবা মদ পানের অনুমতি আছে এমন বার বা ক্লাব।  

অনুমতি ছাড়া অন্যের ছবি তোলা

সম্মতি ছাড়া মানুষের ছবি তোলাকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ‘সাইবার অপরাধ আইনে’ অপরাধ হিসেবে দেখা হয়। 

 এর মানে হল যে প্রকাশ্যে অনুমতি ছাড়া অপরিচিতদের ছবি তোলার অপরাধের জন্য আপনার ৫,০০,০০০ (৫ লক্ষ) দিরহাম জরিমানা এবং ছয় মাসের জেল হতে পারে।  

এটি বিশেষত সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করা ছবিগুলির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, কারণ সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি ফটোগ্রাফারের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন৷ 

আরব আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা পেতে চান ?

দেখে নিন আপনি কিভাবে সহজেই আবেদন করতে পারবেন।

গুজব ছড়ানো

সংযুক্ত আরব আমিরাতে গুজব ছড়ানো বেআইনি, বিশেষ করে যখন এগুলি অনলাইনে শেয়ার করা হয়।  

সোশ্যাল মিডিয়াতে মিথ্যা গসিপ ছড়ানো একধরনের সাইবার-গুন্ডামি, এবং এই অপরাধে তিন বছর পর্যন্ত জেলে যেতে পারে, সাথে ১ মিলিয়ন দিরহাম পর্যন্ত জরিমানাও হতে পারে।  

যারা জেনেশুনে বিভ্রান্তিকর বা মিথ্যা তথ্য ছড়ায়, যা জনস্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এমন লোকদের জন্য এই আইন খুব কঠোর।  

প্রকাশ্যে অভিশাপ 

আপত্তিকর ভাষা, অশ্লীলতা এবং অপমান করা আইনত নিষিদ্ধ।   

এই অপরাধে পর্যটকদের তাদের কল্পনার চেয়ে অনেক বেশি সমস্যা হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে রাস্তার ক্রোধ এবং মধ্যমা আঙুলের প্রদর্শন এবং আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি।   

এধরনের অপরাধে জেল এবং জরিমানা উভয়ই হতে পারে।  

গাড়ি দুর্ঘটনা, সরকারি ভবন, সামরিক স্থাপনা এবং নিষিদ্ধ স্থানে ছবি তোলা 

সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছবি তোলার সময় নিজের এবং সুন্দর দর্শনীয় স্থানগুলিতে ক্যামেরা ফোকাস করা ভাল।  

কারণ, কিছু কিছু স্থানে ছবি তোলা অবৈধ।  

এর মধ্যে রয়েছে গাড়ি দুর্ঘটনা, সরকারি ভবন, দূতাবাস, সামরিক স্থাপনা এবং এমনকি বিমানের ছবিও।  
তবে দর্শনীয় স্থানের ছবি তোলার জন্য কোনও সমস্যায় পড়তে হবে না। তাই দর্শকদের তাদের ক্যামেরা কোথায় নির্দেশ করা উচিত সে বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত। 

জনসমক্ষে মাতাল/ বিশৃঙ্খল হওয়া 

মাতাল এবং উচ্ছৃঙ্খল হওয়া বেশ কয়েকটি দেশে একটি অপরাধ, এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতও এর থেকে আলাদা নয়।  

যাইহোক, একজনকে উচ্ছৃঙ্খল হিসাবে দেখার জন্য মাতাল হওয়ার দরকার নেই।  

উচ্চস্বরে গান বাজানো এবং জনসমক্ষে নাচকেও অনেক দেশে দেশে উচ্ছৃঙ্খল আচরন হিসাবে দেখা হয়। বিশেষত মসজিদ/মন্দির এবং প্রার্থনার স্থান, যেখানে সঙ্গীত সাধারণত বন্ধ থাকে। তাই পর্যটকদের উচিত তাদের স্পিকারের ভলিউম কম রাখা।  

প্রেসক্রিপশন/অনুমতি ছাড়া ওষুধ আনা 

আপনার নিজ প্রেসক্রিপশনের ওষুধ আনার জন্য সঠিক কাগজপত্র প্রয়োজন।  

প্রযোয্য ক্ষেত্রে,  বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের বোঝার জন্য প্রেসক্রিপশনটি ইংরেজিতে অনুবাদ করা গুরুত্বপূর্ণ।  

দেশটিতে নির্দিষ্ট ওষুধ আনার জন্য পর্যটকরা অনেক সমস্যায় পড়তে পারেন, তাই কী অনুমোদিত এবং কী নয় তা খুঁজে বের করার জন্য তাদের নিজ নিজ দেশে সংযুক্ত আরব আমিরাত দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

মনে রাখবেন, অনুমোদিত ওষুধগুলিও শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য আনার অনুমতি দেওয়া হয়। 

অনুমতি ছাড়া মাদক সেবন 

সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুমতি ছাড়া মাদক সেবন করবেন না।  

যে কোনো ধরনের মাদকের ব্যাপারে দেশটির জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। এমনকি দেশের বাইরে সেবন করা ওষুধের পরীক্ষায় (ড্রাগ টেষ্ট) ব্যর্থ হওয়ার জন্য জেলে খাটার নজিরও আছে।  

এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে পর্যটকরা দেশে থাকাকালীন কোনও মাদক সেবনে নিজেদের জড়াবেন না, কারণ এর পরিণতি কারাবাস এবং আদলত নির্ধারিত আরো শাস্তি।  

ধর্ম ও সংস্কৃতিকে অসম্মান করা 

এটি অবাক হওয়ার কিছু নেই যে বিশ্বের যে কোনও দেশে ভ্রমণ করার সময়, পর্যটকদের গন্তব্য স্থানের স্থানীয় ধর্ম এবং সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত।  

আমিরাতি সংস্কৃতি, ইসলাম এবং দেশের স্থানীয় জনসাধারনের প্রতি যে কোনও অসম্মান প্রদর্শনে পর্যটকদের জেলে যেতে হতে পারে। সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় সম্মান অন্য সকলের জন্যও প্রযোজ্য এবং প্রত্যেককে সম্মান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

অসম্মানজনক পোশাক  

বেশিরভাগ লোকের ধারণার চেয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত পোশাকের ক্ষেত্রে অনেক বেশি নম্র এবং সহনশীল। এখানে চাইলেই পর্যটকরা পশ্চিমা পোশাক পরতে পারবেন।  

তবে স্থানীয় সংস্কৃতি কে সম্মান দেখিয়ে, এর সাথে মানানসই পোশাক পরা গুরুত্বপূর্ণ। এর অর্থ হল ভ্রমণকারীদের পোশাক পরার আগে তারা কোথায় যাচ্ছেন তা মনে রাখা উচিত।  

বিকিনি এবং হাফপ্যান্ট সম্পূর্ণভাবে সমুদ্র সৈকতে অনুমোদিত, এমনকি সর্বজনীনও – তবে একটি মসজিদ পরিদর্শন করার সময়, পর্যটকদের ধর্মীয় নিয়ম অনুসারে পোশাক পরতে হবে।  
 
মল এবং পাবলিক প্লেসগুলোতে যাওয়ার সময় আপনার পোষাক যেন শিশু এবং মহিলাদের বিব্রত হাবার কারন না হয়।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *