(১)
মোবাইল হারালে আমরা এত কাতর হয়ে পরি কেন? কারণ মোবাইল তো এখন শুধু কথা বলার জন্য না, এটার ব্যবহার বহুমুখী। এটা এখন অনেক টা পারসোনাল অর্গানাইজার এর মত। ক্যালেন্ডার এ মানুষের জন্মদিন থেকে অফিসের মিটিং, মোবাইল ক্যামেরার সেলফীবাজি থেকে প্রাইভেট ফটোজ, সবই মোবাইলে। এর উপর আছে ব্যাংকিং এপ্লিকেশন এবং ফাইন্যান্সিয়াল ডাটা।
তাই এটা হারালে অস্থির হবার অনেকগুলো কারণ আছে।
আচ্ছা, আপনাদের মধ্যে কয়জন আছেন নিজেদের মোবাইলের গ্যালারীতে থাকা সব ছবি আমাদের কে দেখার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে সাহস রাখেন? যদি কেউ থাকেন, তাহলে তার জন্য সাধুবাদ।
গত দুইদিন ধরে BabyVote নামে একটা ভোটিং ফেসবুকে শুরু হয়েছে। বহুকাল ভোট দিতে না পেরে আমাদের অনেকের হাত নিশপিশ করার দরুন অনেকেই এখানে/সেখানে ক্লিক করে দো-জাহানের অশেষ নেকি হাসিল করছি। এর উপর আছে ভোট না দিলে বন্ধুদের নাখোশ হবার ভয়!
তাই সাহস করে দিলাম দুইখান ক্লিক। এরপরেই বুঝলাম, কিসের বিনিময়ে এই সিদ্ধি লাভ! ছবিতে দেখুন (৪)
ওনারা কোথায় কোথায় এক্সেস নিচ্ছেন সেটার একটা ছবি এখানে দিয়ে দিচ্ছি। নাম এবং ইমেইল নিলে আপত্তি করতাম না, অথচ ওনারা আমার ফ্রেন্ড লিস্ট এবং আমার গ্যালারীর পারমিশনও নিয়ে নিচ্ছেন। ভাই, আমি তো সামান্য অনলাইন ভোটার (হইতে পারে সেটা মধ্যরাতে কিংবা দিনের বেলায়), আমি তো নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছি না, তাহলে কিসের এত কোলাভেরি! কেন, The Why!!
বেবিভোটের (babyvote) ঠিকুজির বিস্তারিত পাবেন, ছবি (৩) এ।
আমি দুঃখিত, বন্ধুদের খুশি করার জন্য মাত্র ৫ জনের একটা কোম্পানির হাতে আমি আমার ফটো গ্যালারী তুলে দিতে পারছি না। কারণ আমার যেই ছবি আমি একা দেখে আমোদ পাই, সেটা দেখে আপনি দুঃখ পেতে পারেন। এবং আমি আমার যেই তথ্য পাবলিক করি নাই, সেটা দেখতে পারার কিংবা অন্যের হাতে যাবার কোন প্রয়োজন আমার অন্তত নাই।
এই যুগে তথ্যই গোল্ড এবং এইসব প্রতিযোগিতার হোতারা সেই গোল্ডই আপনার থেকে নিয়ে নিচ্ছে। অথচ গোল্ডের বিনিময়ে আপনাকে দিচ্ছে কিছু খুচরো পয়সা, সেটাও একটা নামকা-ওয়াস্তে একটা প্রতিযোগিতার মূলা ঝুলিয়ে!
(২)
আপনাদের মধ্যে যারা এমন অনেক আপ্লিকেশনকে আপনাদের ফেসবুকে এক্সেস দিয়ে রেখেছেন, তারা চাইলে সেই পারমিশন রিভিউ করতে পারেন।
আর যেসব এপ্লিকেশন দরকার নাই, সেগুলা ঝাটিয়ে বিদায় করুন। যাদের কে ছাড়া বাঁচবেন না, বা শরবত খাইলে মিষ্টি লাগে না, সেইসব এপ্লিকেশন এর হাত পা ভেঙ্গে দিন। মানে যেসব জায়গায় তাদের এক্সেস দরকার নাই, সেগুলো রিমুভ করে দিন।
– কিভাবে অপ্রয়োজনীয় এপ রিমুভ করবেন? আমি এই লেখার নিচেই, স্টেপ গুলো দিয়ে দিচ্ছি। ছবিতে দেখুন (১)
– কিভাবে অপ্রয়োজনীয় এপ এর হাত-পা ভাঙ্গবেন? বিস্তারিত দেখুন নিচের ছবিতে (২)
দুইদিন পরপর আইডি হ্যাক হয়ে গেছে এমন কান্নাকাটি করার আগে, নিজেকেই প্রশ্ন করুন ঠিক কোথায় কাকে কি পরিমাণ জায়গা দিয়েছেন। জুকার মামাকে বাদ দিলে, আপনার ফেসবুক আইডির মালিক আপনি এবং এটার নয়ছয় হলে আপনার চাইতে বেশি দুঃখিত কেউ হবে না।
হ্যাপি ফেসবুকিং।