প্রবাসী কর্মী হবার কারণে জীবনে অসংখ্যবার উড়োজাহাজে যাতায়াত করতে হয়েছে। আমার বন্ধুরা অনেকে বলেন, আমি যাচ্ছি নাকি আসছি, সেটাই বুঝতে তাদের বেগ পেতে হয়।
অথচ কোনদিন ভেবে দেখিনি বিমান যাত্রায় সব চাইতে নিরাপদ আসন কোনটি? কারণ টিকেট কেনার সময় যাত্রার দিনের চাইতেও অনেক সময় টিকেটের দাম বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
সস্তা টিকেটের আবার ভাল মন্দ কি!
ভাল কিংবা মন্দ বলার জন্য আপনার ঠিক করা মানদণ্ড কোনটি? বসায় আরাম, টয়লেট কাছে, নাকি বিমান দুর্ঘটনায় আপনার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা!
ধরুন আপনি আছেন টয়লেটের কাছে। সুবিধাটি হচ্ছে আপনি চাইলেই অল্প হেটে টয়লেট ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু এই সুবিধা নেবার জন্য আপনাকে টয়লেটের মৃদু দুর্গন্ধ এবং ওইখানে যাওয়া মানুষের ভীর সহ্য করতে হবে।
আবার আপনি যদি আরামদায়ক সীট চান, তাহলে আপনাকে হয়তো বিজনেস ক্লাসের টিকেট কাটতে হবে। সেক্ষেত্রে সীট আরামদায়ক হবে, কিন্তু টিকেট কিনতে হবে অনেক বেশি দামে।
নিরাপত্তার দিকটি যদি ভাবেন, তাহলে হয়তো ভাবছেন দরজার কাছের সীটটিই আপনার জন্য সব চাইতে ভাল। আসলেই কি তাই ?
বিমান তো বাস নয়, চাইলেই আপনি টুপ করে নেমে যেতে পারবেন না। তাই দরজা বা জানালা যেখানেই বসুন না কেন, আপনার জন্য সেটা বিশেষ কিছু না। তাই আসুন পরিসংখ্যানের দিকে একটু নজর দেই।
1985 থেকে 2020 সালের মধ্যে দুর্ঘটনা এবং মৃত্যুর দিকে তাকিয়ে FAA রিপোর্ট অনুযায়ী বসার জন্য সবচেয়ে খারাপ জায়গা হল প্লেনের মাঝখানে। কেবিনের মাঝখানে আসনগুলিতে মৃত্যুর হার ৩৯%, যেখানে সামনের অংশে ৩৮% এবং পিছনের অংশে ৩২% ছিল৷
‘পপুলার মেকানিক্স‘ ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড ক্রাশ ডেটার মাধ্যমে খুঁজে বের করে দেখতে পায় যে, উইংয়ের পিছনের আসনগুলির বেঁচে থাকার হার ছিল ৬৯%, যেখানে সামনের আসনগুলিতে বেঁচে থাকা ভাগ্যবান ছিলেন ৪৯%। আর যারা মাঝে ছিলেন, তাদের ভাগ্য ৫৬% সু-প্রসন্ন ছিল।
এর থেকে আমরা কি সিদ্ধান্তে আসতে পারি? পরের বার বিমানে চড়ার সময় ঠিক কোথায় আপনি বসতে চান? ইচ্ছে হলে আমাদের জানাতে পারেন পারেন এই লেখার নিচে আপনার মূল্যবান মতামত দিয়ে।
আপনার বিমান যাত্রা সুখের এবং নিরাপদ হোক।